আলোচ্য বিষয়
স্নেহ দেখানো
মুসাদ্দাদ (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ ((রাঃ)) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে এবং হাসান ((রাঃ)) কে এক সাথে কোলে তুলে নিয়ে বলতেন, হে আল্লাহ্! আমি এদের দু’জনকে মহব্বত করি, আপনিও এদেরকে মহব্বত করুন। (বুখারী)
আমার পিতা কুরবান হউন! এ-ত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাদৃশ্য আলীর সাদৃশ্য নয়। তখন আলী ((রাঃ)) হাসতেছিলেন। গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ)
মায়া ও মমতা প্রদর্শন
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা হাসান ইবনু ‘আলীকে চুম্বন করেন। সে সময় তাঁর নিকট আকরা‘ ইবনু হাবিস তামীমী উপবিষ্ট ছিলেন। আকরা‘ ইবনু হাবিস বললেনঃ আমার দশটি পুত্র আছে, আমি তাদের কাউকেই কোন দিন চুম্বন দেইনি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পানে তাকালেন, অতঃপর বললেনঃ যে দয়া করে না, সে দয়া পায় না।
সকল সন্তানকে সমান অধিকার দেয়া
তোমাদের ছেলেদের মধ্যে (সমতা এবং) ইনসাফ করবে, তোমরা তোমাদের ছেলেদের মধ্যে (সমতা এবং) ইনসাফ করবে।
যে, তার পিতা তাকে নিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলেন, আপনি সাক্ষী থাকুন, আমি নোমানকে আমার অমুক অমুক মাল দান করলাম। তিনি বলেনঃ তুমি নোমানকে যেমন দান করেছো, তোমার অন্য সকল পুত্রকেও কি তদ্রূপ দান করেছো? তিনি বলেন, না। তিনি বলেনঃ তাহলে এ ব্যাপারে আমাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে সাক্ষী বানাও। তিনি বলেনঃ তাদের সকলে সমভাবে তোমার সাথে সদ্ব্যবহার করলে তা কি তোমাকে আনন্দিত করবে না? তিনি বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ তাহলে এরূপ করো না।
গ্রন্থঃ সুনানে ইবনে মাজাহ
খুব বেশি সবর করতে হবে
আমি দশটি বছর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমত করেছি। কিন্তু তিনি কক্ষনো আমার প্রতি উঃ শব্দটি করেননি। এ কথা জিজ্ঞেস করেননি, তুমি এ কাজ কেন করলে এবং কেন করলে না?
আমরা মসজিদে উপবিষ্ট ছিলাম, হঠাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূল আস ইবনু রবীর কন্যা উমামকে কোলে নিয়ে আমাদের নিকট আসলেন। তার মা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা যয়নব (রাঃ)। তিনি ছিলেন ছোট বালিকা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বহন করেই বেড়াতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত আদায় করলেন তাকে কাঁধে রেখেই। তিনি ‘রুকু’ করার সময় তাঁকে কাঁধে রেখে দিতেন। দাঁড়ালে আবার কাঁধে তুলে নিতেন। এমনিভাবে তিনি তার সালাত শেষ করলেন।
সঠিক পথ নির্দেশ দেয়া
যখন লোকমান উপদেশচ্ছলে তার পুত্রকে বললঃ হে বৎস, আল্লাহর সাথে শরীক করো না। নিশ্চয় আল্লাহর সাথে শরীক করা মহা অন্যায়। (৩১:১৩)
হে বৎস, নামায কায়েম কর, সৎকাজে আদেশ দাও, মন্দকাজে নিষেধ কর এবং বিপদাপদে সবর কর। নিশ্চয় এটা সাহসিকতার কাজ।(৩১:১৭)
যখন তোমাদের সন্তানরা সাত বছরে উপনীত হবে, তখন তাদেরকে নামায পড়ার নির্দেশ দেবে এবং তাদের বয়স যখন দশ বছর হবে তখন নামায না পড়লে এজন্য তাদেরকে মারপিট কর এবং তাদের (ছেলে-মেয়েদের) বিছানা পৃথক করে দিবে।
নাসর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়্যূব ইবনু মূসা তার পিতা তার পিতামহ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পিতা তার সন্তানকে ভাল আদব শিক্ষা দেওয়া অপেক্ষা মর্যাদাবান আর কোন জিনিস দান করতে পারেন না।
সন্তানের প্রতি দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা
সাবধান! তোমরা সকলেই রাখাল (দায়িত্বশীল) এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার রাখালী (দায়িত্ব পালন) প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যিনি জনগণের নেতা তাকে তার রাখালী (দায়িত্ব) বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ব্যক্তি তার পরিবারের লোকদের রাখাল (অভিভাবক)। তাদের ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা হবে। স্ত্রী তার স্বামীর সংসারের রাখাল (ব্যবস্থাপিকা)। তাকে এর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। গোলাম তার মনিবের সম্পদের রাখাল (পাহারাদার)। তাকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হবে। অতএব, সাবধান! তোমরা সকলেই রাখাল এবং তোমাদের সকলকেই নিজ নিজ রাখালী বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে।
মাঝেমধ্যে তাদের সাথে দুষ্টুমিতে শামিল হওয়া
মাহমুদ বিন ফরাবি থেকে বর্ণিত আছে যে যখন তিনি পাঁচ বছর ছিলেন তখন আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কিছু পানি বালতি থেকে নিয়ে তার মুখে ছিটিয়ে দিয়েছিলেন এবং একই কাজ সেখানে উপস্থিত অন্যান্য শিশুদের সাথে করেছিলেন। (বুখারী)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তাঁর নাতিদের সাথে সবসময়ই খেলাধুলা দুষ্টুমি করতেন এবং তাদেরকে তার কাঁধে চড়াতেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা আলীর ছেলে হাসানকে স্বীয় কাধে বহন করছিলেন। এক লোক বলেন, হে বালক! কতই না উত্তম বাহনে তুমি আরোহণ করেছ (তার মন্তব্য শুনে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সে কতই না উত্তম আরোহী।
শিশুদের সাথে ও সততা রক্ষা করতে হবে
আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, মিথ্যা বাস্তবিকপক্ষেও নয় এবং ঠাট্টাচ্ছলেও সংগত নয়। তোমাদের কেউ তার সন্তানকে কিছু দেয়ার ওয়াদা করে তা তাকে না দেয়ার বিষয়টিও সংগত নয়।
আল-আদাবুল মুফরাদ
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম শিশুদেরকে খুব ভালোবাসতেন। তাদেরকে তিনি ভালোবাসা স্নেহ ও সম্মান দিতেন।
আসুন আমরাও দোয়া করি যেন আল্লাহ পাক আমাদেরকে এভাবে আমাদের সন্তানদের সাথে আচরণ করার তৌফিক দান করেন আমিন।