মহান আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা এবং সেই সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা

মহান আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা এবং সেই সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা

সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার। আল্লাহর উপর নির্ভরতা দুটো বিষয়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

প্রথমত: আল্লাহর উপর ভরসা করা এবং বিশ্বাস করা যে, একমাত্র তিনি সমস্ত কিছুর মালিক। তিনিই কর্মবিধায়ক। তার ইচ্ছাতেই সবকিছু হয়। তিনি সবকিছুর তকদির নির্ধারণ করে রেখেছেন। তিনি সর্বোচ্চ সুমহান।

দ্বিতীয়টি হলো, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। আল্লাহর উপর ভরসা করার মানে এই না যে, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বসে থাকতে হবে। বরংচ মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে সে অনুযায়ী কাজ করা। এটাও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যে শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে বসে থাকে কিন্তু কোন আমল করে না সে আসলে আল্লাহতালার নির্ধারিত নিয়ম এর বিরোধিতা করে। মহান আল্লাহতালা আমাদেরকে তার উপর ভরসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আদেশ দিয়েছেন।

তিনি তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিসালামকে একই নির্দেশ দিয়েছেন। কাজেই একজন ঈমানদার এর পক্ষে কখনোই এর অনুমতি নেই যে সে শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে বসে থাকবে। কেউ যদি শুধুমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে বসে থাকে এর অর্থ হচ্ছে, সে আসলে আল্লাহতালার উপর সম্পূর্ণরূপে তাওয়াক্কুল করছে না। কারণ যে আল্লাহতালার উপর তাওয়াক্কুল করবে সে আল্লাহতালার নির্দেশ অনুযায়ী ভরসা করার পাশাপাশি কর্ম করবে।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যদি কেউ বলে যে আমি বিয়ে করবো না। কিন্তু আমার সন্তান হবে। তাহলে আমরা সবাই তাকে পাগল বলব। কারণ শুধুমাত্র আল্লাহর উপর নির্ভর করে কখনোই সন্তান লাভ করা যায় না যতক্ষণ না কোন ব্যক্তি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে এবং তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হবে। ফলে পরবর্তীতে তাদের গর্ভে সন্তান আসবে। একই ভাবে বলা যায়, কোন ব্যক্তি যদি মসজিদে বসে থেকে সারাদিন দোয়া করে হালাল রুজির জন্য তাহলে কখনোই হালাল রুজি তার কাছে এসে ধরা দেবে না। বরংচ তাকে বের হতে হবে, কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এবং এর মাধ্যমেই তার হালাল রুজি কামাই করতে হবে। মারিয়াম আলাইহিস সালাম গর্ভধারণ করার পর তার সন্তান প্রসবের জন্য দূরে গিয়েছিলেন। তিনি একা থাকা সত্ত্বেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা থেকে বিরত হন নি। আল্লাহ সুবহানাতায়ালা কোরআনে বলছেন,

আর তুমি নিজের দিকে খেজুর গাছের কান্ডে নাড়া দাও, তা থেকে তোমার উপর সুপক্ক খেজুর পতিত হবে।

সূরা মারইয়াম, 25

আল্লাহর আদেশ এর ভিত্তিতে তিনি খেজুর গাছের কান্ড ধরে নাড়া দিয়েছিলেন।

তবে মহান আল্লাহতায়ালা তার কোন কোন ওলিকে কারামত এর অনুগ্রহ প্রদান করেন। যার ফলে তার মাঝে কিছু অলৌকিক গুণাবলী দেখা যায়, যেটা আপাতদৃষ্টিতে অত্যন্ত আকর্ষণীয় মনে হয়। কিন্তু কারামতের বিষয়টি সাধারণভাবে প্রযোজ্য নয়।

আমাদের সবাইকেই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিসাল্লামের এই হাদিসটি মেনে চলা উচিত। তিনি বলেছেন,

যে কাজ উপকারী তা করতে সচেষ্ট থাকো এবং আল্লাহ তালার সাহায্য চাও। কখনোই হতাশ হয়োনা।

মুসলিম,২৬৬৪

এছাড়া আল্লাহ সুবহানাতায়ালা সুরা ফাতেহায় বলেছেন,

তোমরা আমারই কাছে সাহায্য চাওয়া এবং আমারই ইবাদত করো।

আল কুরআন

-শায়খ আব্দুর ইবনে বাসের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *